Friday, November 28, 2014

জেনে নিন খাঁটি স্বর্ণালঙ্কার চেনার উপায়

ধরুন, আপনি পরিচিত বা অপরিচিত কোনো জুয়েলার্সে ১০ ভরি ওজনের সোনার গয়নার অর্ডার দিলেন। গয়না তৈরি হয়ে যাওয়ার পর স্বর্ণকার চোখের সামনেই ঠিকঠাক ১০ ভরি ওজনই পরখ করে আপনাকে বুঝিয়ে দিলেন। ওজন ঠিক আছে আর গয়নাও মনের মতো হয়েছে, আপনি মহাখুশি। তবে আসল ঘটনা জানলে খুশিতে ভাটা পড়তে পারে। কারণ খাঁটি সোনার বেলায় ওজনই শেষ কথা নয়। মানই প্রধান। আপনার সোনার ওজন ঠিক থাকলেও মান ঠিক আছে কি না তা কি পরখ করে দিয়েছেন স্বর্ণকার? সোনার মান যাচাইয়ে এখনো ভরসা অন্ধবিশ্বাস। কষ্টিপাথর দিয়ে ঘষে পরখ করা হয় সোনা কতটা খাঁটি। অথচ এই পরীক্ষা একেবারেই অনুমাননির্ভর। তাহলে উপায় কী? বড় বড় স্বর্ণালংকারের দোকানগুলোতে কিন্তু উপায়টা চলে এসেছে ২০০৬ সালের পর থেকেই। এই মেশিনের নাম স্পেকট্রোমিটার। এই মেশিনে মাপার পর সোনায় খাদ থাকলে সহজেই ধরা পড়ে যাবে। মেশিনই বলে দেবে কত ক্যারেটের সোনা আপনাকে দেওয়া হয়েছে। কোনো চালাকি বা ঠকবাজির সুযোগ নেই।
আপন জুয়েলার্সের গুলশান শাখার ম্যানেজার বাপ্পি দাস জানান, তাঁদের শোরুমে এই মেশিনেই সোনার মান যাচাই করে দেওয়া হয়। এই মেশিনে নির্ভুলভাবে ক্যারেট যাচাই করা যায়, ক্রেতার কাছেও বিশ্বস্ত থাকা যায়।
ওজনে নয়, মানেই সোনার পরিচয়
সাধারণ বাজারে যেসব সোনার গয়না পাওয়া যায় সেগুলোর ১৮, ২১ কিংবা ২২ ক্যারেটের হয়ে থাকে। সোনার গয়না কিনলে দেখবেন ক্যাশম্যামোতে ক্যারেটের পরিমাণ উল্লেখ থাকে। এ ক্ষেত্রে বলে রাখা প্রয়োজন, সলিড গোল্ড বা ২৪ ক্যারেটের (৯৯.৯৯ শতাংশ) খাঁটি সোনায় কিন্তু গয়না হয় না। এটা অনেক নরম থাকে। তাই এই সোনায় ধাতু মিশিয়ে একে হার্ড করা হয়। কপার, সিলভার, ক্যাডমিয়াম ইত্যাদি মেশানো হয়। ২২ ক্যারেটে সোনার পরিমাণ থাকে ৯১.৬ শতাংশ, বাকিটা ধাতু দিয়ে পূরণ করা হয়। ২১ ক্যারেটের মান ৮৭.৫ শতাংশ, বাকিটা ধাতু, ১৮ ক্যারেটের মান ৭৫ শতাংশ, বাকি ২৫ শতাংশ খাদ।
লুকোচুরি খেলাটা হয় এখানে, ধরুন স্বর্ণকার আপনাকে ২২ ক্যারেটের সোনার কথা বলে দিল ১৮ ক্যারেটের, যাতে খাদের পরিমাণ বেশি, তাহলে সেটা তো কষ্টিপাথর দিয়ে যাচাই সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে ওজনও তো কোনো সমস্যা নয়। কারণ যে ওজন আপনাকে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে তা সোনা আর ধাতুরই মোট ওজন। অর্থাৎ খাদসহ ওজন। ফলে ঠকছেন আপনি। কিন্তু মেশিনে পরীক্ষা করলে ধরা পড়ে যায় সবকিছু। এ ক্ষেত্রে মেশিনই বলবে ১৮ ক্যারেট বা ৭৫ শতাংশ সোনা আছে কি না। স্বর্ণকার বা আপনার এ ক্ষেত্রে কিছুই বলার নেই। অথচ কষ্টিপাথর দিয়ে এই পরীক্ষাটি হয় খুবই অবৈজ্ঞানিকভাবে। কষ্টিপাথর দিয়ে সোনা ঘষলে তাতে কিছুটা লেগে থাকে আর লেগে থাকা সোনার হলুদ রঙের শেড পরীক্ষা করে মান জানানো হয়, যা অনুমাননির্ভর। অথচ মেশিনে সফটওয়্যার এই পরীক্ষাটির দায়িত্ব নেয়।
এখন ঢাকার প্রসিদ্ধ জুয়েলারি শোরুমগুলোতে আছে স্পেকট্রোমিটার। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তারা মেশিনেই যাচাই করেন সোনার মান। ক্রেতারাও ভরসা পাচ্ছেন। তাই সোনার গয়না কেনার আগে অবশ্যই এই মেশিনে সোনার মান যাচাই করে নেবেন। এতে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না।
সূত্র: কালেরকণ্ঠ

0 comments:

Post a Comment

 
Design by Wordpress Theme | Bloggerized by Free Blogger Templates | free samples without surveys